মহারাষ্ট্রে ভারত-বাংলাদেশ মহারণের ঝাঁজ Somoybulletin

[ad_1]

চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে লম্বা আলাপ হলো নিক পোথাসের। দুই কোচ কি নিয়ে আলাপ করছেন? বিষয়টি অজানা নয় কারও।
বহু দূরে দাঁড়িয়েও অনুমান করা সহজ; ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচ। পৃথিবীর নানা প্রান্তে গত ক’বছরে এই ম্যাচের ঝাঁজ ছড়িয়েছে।  

ম্যাচের ফল হয়তো বেশির ভাগই হেলেছে একদিকে- কিন্তু এর আগে-পরে হয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে দুই দলের লড়াইয়ের আগে অবশ্য ঝাঁজ কম। এবারের বিশ্বকাপে যে দু দলের যাত্রা একেবারেই উল্টো দিকে।  

ভারতের পথটা বোঝাতে মুম্বাই-পুনে মহাসড়কই সবচেয়ে ভালো উদাহরণ বোধ হয়। মহারাষ্ট্রের দুই শহরকে মিলিয়ে দেওয়া এই পথটা চলার জন্য প্রসস্ত তো বটেই- দেখার জন্যও সুন্দর। দু ধারে পাহাড়, সবুজের মায়া আর ফুলে ভরে ‍উঠা।  

বিশ্বকাপের প্রথম তিনটি ম্যাচ দেখলে ভারতের পথচলা তো তেমনই মনে হওয়ার কথা, তাই না? ব্যাটে সাহস, বোলিংয়ে ধার; শুরুর ওভার, মিডল ওভারে উইকেট নেওয়া। প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার মতো শরীরি ভাষা, আত্মবিশ্বাস টুইটম্বুর একটা দল। এসব আপনি তো দেখেছেনই, ম্যাচের আগে তা আবার মনে করিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশ দলের হেড কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে।  

প্রতিপক্ষ নিয়ে কী বলেছেন তিনি? তার কণ্ঠটা ভাবনায় এনেই পড়ুন, ‘তারা সব জায়গাতেই ভালো। তাদের শুরুর দিকে স্ট্রাইক বোলার আছে। বুমরাহ প্রায় তার সেরা অবস্থায় চলে এসেছে। মাঝের ওভারগুলোর জন্যও তাদের ভালো ও অভিজ্ঞ স্পিনার আছে। টপ-অর্ডার রীতিমতো চলছে, তারা ভয়ঙ্কর। ভয় ছাড়াই তারা খেলছে। মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে তারা তাদের খেলাটাকে উপভোগ করছে। তাদের অনেক সমর্থনও আছে। সবমিলিয়ে তারা খুব ভালো অবস্থায় আছে। ’

ভারত যে ভালো, তা তো আর পরিসংখ্যান দিয়ে বোঝানোর খুব বেশি দরকার নেই। তবুও সেখানে কিন্তু বাংলাদেশই সাম্প্রতিক সময়ে এগিয়ে। শেষ ৪ ম্যাচের তিনটিতেই জয়ী দল তারা। টাইমফ্রেমটা আরেকটু বড় করবেন? তাহলে ২০১৫ বিশ্বকাপের ওই ‘বিতর্কিত’ কোয়ার্টার ফাইনালের পরের ১১ ম্যাচের পাঁচটিতে জিতেছে বাংলাদেশ।  

বিশ্বমঞ্চে অবশ্য চারবার দেখা হয়ে সুখস্মৃতি ওই একটাই- ২০০৭ বিশ্বকাপে। সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল…এই রে! তামিমের নামটা অবশ্য লেখায় চলে আসার একটা কারণও আছে। ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনেও যে ছিলেন নানা বিতর্কের পর বিশ্বকাপে না থাকা এই ক্রিকেটার।  

ভারতীয় এক সাংবাদিক প্রশ্নটা করেই ফেলেছিলেন, বিশ্বকাপে কি তামিমকে মিস করছেন না? উত্তরটা হাথুরুসিংহে দিয়েছেন ‘জানা নেই’ বলে। তামিমকে নিয়ে আসা কি কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক ঠেকছে? ২০০৭ বিশ্বকাপে স্মৃতির আয়নায় আটকে যাওয়া জহির খানকে হাঁকানো তামিমের ছক্কাটাও তার আসার একটা কারণ হয়তো হতে পারে হয়তো। ওই ম্যাচেই যে প্রথম ও শেষবার বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে আলোচনাও আছে বেশ ভালোভাবেই। বিশ্বকাপের আগের কয়েকটা বছর বাংলাদেশ দারুণ খেলেছে ওয়ানডেতে। সুপার লিগের তৃতীয় সেরা দল ছিল। দলকে দেখে বেশ সাজানো-গোছানোও মনে হচ্ছিল। অথচ মূল মঞ্চে এসে কেমন ছন্নছাড়া লাগছে বাইরে থেকে দেখে। ব্যাটিং অর্ডার একদমই ঠিকঠাক নেই, বোলিংয়েও আগের দিনগুলোর ধার নেই। কেন এমন হলো?

বাংলাদেশ হেড কোচের জবাব ছিল এমন, ‘ব্যাটিং অর্ডার আমাদের পরিকল্পনা আর ভাবনা অনুযায়ী সেরা কম্বিনেশন গড়তেই করেছি। এগুলো নিয়ে আগেভাগেই খেলোয়াড়দের বলা হয়েছে। তাদেরকে ওভাবে অনুশীলনও করানো হয়েছে। ’

কোচের ব্যাখ্যা মেনে নেওয়া ছাড়া আপাতত আর উপায় নেই। কিন্তু বাংলাদেশ যে পুনের হাইওয়ে থেকে নেমে স্টেডিয়ামে আসার আঁকাবাঁকা পথে দিশেহারা- সেটি বলা বাঞ্জনীয়ই। ভারত ম্যাচের আগে দলের অবস্থাও অবশ্য পরিষ্কার নয়।  

নিউজিল্যান্ড ম্যাচে পাওয়া চোটের পর অধিনায়ক সাকিব আল হাসান খেলবেন কি না, সেটি এখনও পরিষ্কার করা হয়নি। ম্যাচের দিনই নাকি নেওয়া হবে সিদ্ধান্ত। ব্যাটিং উইকেটে একজন অতিরিক্ত বোলার খেলানোর ভাবনাও কাজ করছে টিম ম্যানেজম্যান্টের মাথায়।  

সেটি কে হবেন? একজন স্পিনারই হওয়ার কথা। বাঁ-হাতে স্পিনটা করেন বলে এগিয়ে থাকবেন নাসুম আহমেদই। ব্যাটিংটা একটু-আধটু পারেন বলে দূরে সরিয়ে দেওয়া যাচ্ছে না মাহেদী হাসানকে। একটা বাঁহাতি পেসার কমিয়ে হাসান মাহমুদেরও হয়তো জায়গা মিলে যেতে পারে।  

এতসব পরিকল্পনা করে যদি বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়েই দেয়? দক্ষিণ আফ্রিকার নেদারল্যান্ডসের কাছে হেরে যাওয়া বা আফগানিস্তানের ইংল্যান্ডকে হারানোর মতোই কি একটা আপসেট হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে বাংলাদেশকেও সমান গুরুত্ব দেওয়ার কথাই বলেছেন ভারতের বোলিং কোচ পরাশ মামব্রে।  

ভারতীয় কোচের কণ্ঠে সমীহ থাকলেও বাংলাদেশের জন্য পথটা অনিশ্চয়তার। চার ম্যাচের তিনটিতে হেরে গেলে বিশ্বকাপ নিয়ে যে বড় স্বপ্নের কথা শোনা যাচ্ছিল এতদিন, সেটি স্থিমিত হয়ে আসবে একদমই। পুনের প্রেস কনফারেন্স রুমে যাওয়ার পথে দেখা বিকেলের মায়াবী সূর্যটার মতোই।

গত কয়েকদিনে শোনা ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের পর তোমাদের এই ম্যাচটাই সবচেয়ে বড়, বারবার শোনা আইসিসির মিডিয়া ম্যানেজার ক্যালাম ডেভিসের কথাটা হয়তো সত্যিই থাকবে। কিন্তু একটু হলেও রঙ হারাবে। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রাও কি বিবর্ণ হয়ে যাবে না? কে জানে!

বাংলাদেশ সময়: ২৩০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৮, ২০২৩
এমএইচবি/আরইউ



[ad_2]
Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *