[ad_1]
ভয় ঠিকই উঁকি দিচ্ছিল প্রোটিয়াদের মনে। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক টেম্বা বাভুমার কথাতেই তা অনেকটা স্পষ্ট ছিল।
শেষ পর্যন্ত সেই ভয়ের কাছেই যেন কাবু হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকা। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবার ওয়ানডে বিশ্বকাপেও নেদারল্যান্ডসের কাছে হারল তারা। ১১ মাসের ব্যবধানে বিশ্বমঞ্চে রচিত হলো আরও একটি ডাচ রূপকথা।
বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৩৮ রানে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। সেই নেদারল্যান্ডস যারা সবশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলেছিল ১২ বছর আগে। ধর্মশালা স্টেডিয়ামে অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসের অপরাজিত ফিফটিতে ৮ উইকেটে ২৪৫ রান সংগ্রহ করে তারা।
প্রোটিয়াদের জন্য সেই লক্ষ্য মামুলিই মনে হচ্ছিল। বিশেষ করে প্রথম দুই ম্যাচে তাদের দাপুটে জয়ের পর তা মনে না হওয়ার কারণ নেই। কিন্তু চোকার্স খ্যাত দলটি এই বিশ্বকাপেও ‘চোক’ করতে ভুলল না। জবাব দিতে নেমে ২০৭ রানেই গুটিয়ে যায় টেম্বা বাভুমার দল।
দুই দিন আগেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বকাপে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল আফগানিস্তান। সেই রেশ না কাটতেই আরও বিস্ময়কর এবং মনে রাখার মতো ম্যাচ উপহার দিল নেদারল্যান্ডস। ২০১১ বিশ্বকাপে ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে।
তবে ১৬ বছর আগে স্কটল্যান্ডকে হারানোর পর এবার আবারও বিশ্বকাপে জয়ের দেখা পেল ডাচরা। যদিও টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তাদের শুরুটা তেমন ভালো হয়নি। ৪৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৮২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে ডাচরা।
দলীয় ২২ রানের মাথায় ওপেনার বিক্রমজিৎ সিং ধরেন সাজঘরের পথ। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও’ডাউড। মার্কো ইয়ানসেনের বলে ডি ককের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর কলিন অ্যাকারম্যান ১৩, বাস ডে লেডে ২ রান করে ফিরলে চাপে পড়ে ডাচরা। মাঝে তেজা নিদামানুরুর ও সাইব্রান্ড এঙ্গেলব্রেখট থিতু হলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। দুজনেই ফেরেন ২০ রানে।
তখনই একপ্রান্ত আগলে রেখে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস। লোয়ার অর্ডারদের সঙ্গে নিয়ে দলকে লড়াকু পুঁজি এনে দেন তিনি। তার ৬৯ বলে ১০ চার ও একটি ছক্কায় অপরাজিত ৭৮ রানের ইনিংসের ভর করে ৮ উইকেটে ২৪৫ রান করে ডাচরা। এছাড়া ফন ডার মারওয়ে ১৯ বলে ২৯ এবং ৯ বলে ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন আরিয়ান দত্ত। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন লুঙ্গি এনগিডি, মার্কো ইয়ানসেন ও কাগিসো রাবাদা।
বোলিংয়ের মতো অবশ্য ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি প্রোটিয়াদের। অষ্টম ওভারেই সাজঘরে ফেরেন আগের দুই ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান কুইন্টন ডি কক। ২২ বলে ২০ রান করেন বাঁহাতি এই ওপেনার। এরপর আট রানের ব্যবধানে আরও তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিনা উইকেটে ৩৬ রান থেকে ৪ উইকেটে ৪৪ রানে পরিণত হয় তারা।
জয়ের পাল্লাটা তখনো প্রোটিয়াদের দিকেই ভারী ছিল। কারণ উইকেটে ছিলেন ডেভিড মিলার ও হাইনরিখ ক্লাসেন থাকায়। দুজনে মিলে ভালো একটি জুটি গড়েই ফেলেছিলেন। কিন্তু আজ দিনটা যে ছিল ডাচদের নামে! ক্লাসেনকে ফিরিয়ে ৪৫ রানের জুটি ভাঙেন লোগান ফন ভিক। ২৮ বলে ৪ চারে ২৮ রান করেন ক্লাসেন।
অন্যদিকে একবার জীবন পেয়েও সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি মিলার। ফন বিকের শিকার হওয়ার আগে ৫২ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৩ রান করেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। তার বিদায়ে ডাচদের জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে যায়। কেননা লক্ষ্য থেকে তখনো ৯৯ রান দূরে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। লোয়ার অর্ডার ব্যাটাররা চেষ্টা করেও সেই লক্ষ্যের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেননি। ৩৭ বলে ৪০ রান করে কেবল হারের ব্যবধান কমিয়েছেন কেশভ মহারাজ।
ডাচদের হয়ে লোগান ফন ভিক তিনটি উইকেট শিকার করেন। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন পল ফন মেকেরেন, রোলফ ফন ডার মারওয়ে ও বাস ডে লেডে।
বিশ্বকাপে প্রত্যেক দলের তিন ম্যাচ শেষে একমাত্র শ্রীলঙ্কাই এখন পর্যন্ত জয়ের দেখা পায়নি। ডাচদের পরের ম্যাচটা তাদের বিপক্ষেই। ধর্মশালার মতো লক্ষ্ণৌতেও কমলার সুবাস ছড়ানোর চেষ্টায় থাকবেন এডওয়ার্ডস-ডে লেডেরা!
বাংলাদেশ সময় : ২৩৩৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০২৩
এএইচএস
[ad_2]
Source link