[ad_1]
মুম্বই: ফুটবলের মতো ক্রিকেটও বিশ্বব্যাপী খেলা। অথচ খেলে মাত্র বিশ্বের কয়েকটা দেশই। দীর্ঘদিন ধরে এমনটাই চলছে। তবে ২.৫ মিলিয়ন ফ্যানবেস রয়েছে ক্রিকেটের। টিভি স্বত্ব থেকে আয়ও হয় বিপুল। আর এটাই ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছে। ঠিক ফুটবলের পরেই।
তবে বাস্তব হল, ক্রিকেট নিয়ে উন্মাদনা শুধু কমনওয়েলথ দেশগুলিতেই। এর মধ্যে ভারতে এই সংখ্যাটা ৭০ শতাংশ। তার বেশিও হতে পারে।
কিন্তু এবার খেলা ঘুরে যাওয়ার সম্ভাবনা ষোলো আনা। কারণ ২০২৮ অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে টি২০ ক্রিকেট। লস অ্যাঞ্জেলসে দেখা যাবে ব্যাট-বলের লড়াই। খেলাধুলা এবং বাণিজ্যিক, উভয় দিক থেকেই উপকৃত হবে ক্রিকেট।
আর খেলাধুলোর দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে অলিম্পিক ক্রিকেটকে এক অসাধারণ প্ল্যাটফর্ম দিচ্ছে, সম্ভবত বিশ্বকাপের চেয়েও বড়। পোডিয়ামে গলায় মেডেল, ব্যাকগ্রাউন্ডে জাতীয় সঙ্গীত – এ এক অতুলনীয় অনুভূতি। ১৮৯৬ সালের ইতিহাস মনে করিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: ভারতের স্বপ্ন অলিম্পিক ২০৩৬! পাশে থাকার বার্তা দিলেন আমেরিকার রাষ্ট্রদূত
ক্যারিবিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অফ ন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটির সভাপতি কিথ জোসেফ বলেন, ‘অলিম্পিকের অংশ হতে পারা ক্রিকেটের জন্য দারুণ খবর। বিশ্বব্যাপী ক্রিকেটের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে’। লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তির পিছনে কিথেরও সমর্থন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘টি২০ ক্রিকেটের সঙ্গে যুবসমাজ একাত্ম অনুভব করে। এটা চমৎকার প্ল্যাটফর্ম। ২০২৪-এ টি২০ বিশ্বকাপের সহ আয়োজক দেশ আমেরিকা। তার আগে অলিম্পিকের অন্তর্ভুক্তির খবর মানুষের কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবে’।
তবে শুধুমাত্র অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্তির কারণে ক্রিকেট ফুটবলের মতো সর্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা পাবে, এমন আশা করা বোকামি হবে। আইসিসি র্যাঙ্কিংয়ে পুরুষদের টি২০ তালিকায় ৮৭ এবং মহিলাদের ৬৬টি দেশ রয়েছে। সেখানে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে পুরুষদের ২০৭টি এবং মহিলাদের ১৮৬টি দেশ খেলে। পরিসংখ্যান থেকেই বোঝা যাচ্ছে, কী বিশাল ব্যবধান।
হ্যাঁ, এটা অস্বীকার করা যাবে না যে টি২০ ফরম্যাট ক্রিকেটকে আফ্রিকা, ইউরোপ, লাতিন আমেরিকার মতো দেশে পৌঁছে দিয়েছে। তাই বিশ্বকাপে অন্তর্ভুক্তি ক্রিকেটকে বিশ্বব্যাপী দর্শকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বড় বাজার। উপমহাদেশের মতো দর্শক উপস্থিতি রয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকেই ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ২০৩২-এর ব্রিসবেন অলিম্পিকেও ক্রিকেট জায়গা করে নেবে।
এক অভিজ্ঞ বিসিসিআই প্রশাসকের কথায়, ‘অষ্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেট ব্যাপক জনপ্রিয়। ওঁরা অলিম্পিকে খেললে দারুণ ব্যাপার হবে। ক্রিকেট সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে তো যাবেই, অলিম্পিকে খেলার স্থায়ী দরজাও খুলে যেতে পারে’।
যাই হোক, অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্য ক্রিকেটকে বেশ কয়েকটি বাধা পেরোতে হয়েছে। কর্মকর্তা এবং ক্রিকেটার, উভয়ই বেশ কয়েকটি নিয়ম নিয়ে নারাজ ছিলেন। বিশেষ করে, যখন তখন ডোপ টেস্ট। এটা আইওসি, আইওএ, ওয়াডা ইত্যাদি দ্বারা নির্ধারিত।
১৯০০ সালের অলিম্পিকে শেষবার ব্যাট বলের লড়াই দেখেছিল বিশ্ব। সেবার সোনা জিতেছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু ক্রিকেটকে অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়নি তারা। ‘হ্যাঁ, কিছু নির্দিষ্ট বিষয়, কিছু সময় বোঝাপড়াতেও অসুবিধা হয়েছিল। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, বিসিসিআই, আইসিসি এবং অন্যান্য কয়েকটি ক্রিকেট বোর্ড শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে’। বললেন বিসিসিআই প্রশাসক।
খেলাধুলোর ক্ষেত্রের বাইরে আরও একটা জিনিস আইওএ-র মাথায় ছিল। সেটা হল, ভিড়। স্টেডিয়ামে দর্শক উপস্থিতি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেক এশিয়ান রয়েছে।
ব্যবসায়ীদেরও পোয়া বারো। আসলে বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, এশিয়ানরা ক্রিকেটের জন্য পাগল। অলিম্পিকে ক্রিকেট অন্তর্ভুক্ত হলে তাঁরা যে ভিড় করে দেখতে যাবেন বলাই বাহুল্য। টিভিতেও খেলা দেখবেন। চলবে লাইভ স্ট্রিমিং।
এক বিশেষজ্ঞ বলছেন, ‘লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে ক্রিকেট থাকার জন্যই সম্প্রচারের বিক্রয় মূল্য একলাফে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বাড়তে পারে। সিঙ্গল এডিশনের জন্য এটা বিশাল।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Source link