[ad_1]
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: গ্রামের স্থানীয় একটি গরুর বাজার নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে প্রকাশ্যে হত্যা। সেই হত্যার পর বাড়িঘরে চলে হামলা-ভাঙচুর আর লুটপাট।
ঘটনার পর থেকেই গ্রামছাড়া প্রায় শত পরিবার।
প্রতিপক্ষের ভয়ে তিন মাস ধরে নিজেদের ভিটেমাটি ছেড়ে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি বা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছে পরিবারগুলো। হামলা ও মামলার ভয়ে কেউ বাড়িতে আসছে না। এতে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া বিঘ্নিত হওয়ার পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে গ্রামের স্বাভাবিক জীবন-যাপন।
এমনই এক আতঙ্কপুরীতে পরিণত হয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সাদেকপুর গ্রাম।
সরেজমিন ওই গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বাজার সুনসান নীরবতা। দোকানগুলো একাধারে তালাবদ্ধ। গ্রামের মেঠোপথজুড়ে মাঝে মধ্যে কারও দেখা মিললেও বেশিরভাগ সময়ই থাকছে নীরব-নিস্তব্ধতা। দেখে মনে হতে পারে হিন্দি সিনেমার কোনো ভয়ানক দৃশ্যের প্রদর্শন। কিন্তু তা নয়, একটি খুনের ঘটনা ও পরবর্তী গ্রাম্য সহিংসতার কারণে সাদেকপুর গ্রাম এখন এমনই আতঙ্কপুরী। হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ভয়ে ঘর, বাড়ি এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ফেলে গ্রামছাড়া হয়ে আছে অন্তত ১০০ পরিবার।
জানা যায়, পূর্ব শত্রুতা ও একটি গরুর বাজার নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গ্রামের ইসমাইল মিয়ার গোষ্ঠীর সঙ্গে নজু, বাছির ও সাবেক মেম্বার মালেক মিয়ার গোষ্ঠীর বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে, গত ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় সাদেকপুর বাজারে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হন ইসমাইল মিয়ার পক্ষের গোলাপ মিয়া। পরে ২৯ জুলাই ঢাকাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
গ্রামছাড়া পরিবারগুলোর অভিযোগ, মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের লোকজন দলবল নিয়ে নির্বিচারে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ অবস্থায় তারা গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে তিন মাস ধরে বিভিন্ন গ্রামে আশ্রিত। গ্রামে ফিরতে চাইলেও প্রতিপক্ষের লোকজনদের হামলায় পালিয়ে আসতে হয়। এতে ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় পাশাপাশি তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা এখন হুমকির মুখে।
এমতাবস্থায় নিজ ভিটে বাড়িতে ফিরতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন তারা।
এদিকে, নিহত গোলাপ মিয়ার স্ত্রী ও সন্তান জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে গোলাপ মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁদ পেতে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার সুষ্ঠু বিচারসহ দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান তারা। এছাড়া প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের সঙ্গে তারা কোনোভাবেই জড়িত নয় বলেও দাবি করেন।
এ বিষয়ে নবীনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, এসব ঘটনায় উভয় পক্ষ থেকে দুটি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গ্রামে স্বাভাবিক পরিবেশ বজায় রাখতে টহলের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। গ্রামবাসী স্বাভাবিক জীবন যাপন করুক। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনগত সহায়তা থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৫, ২০২৩
এসআইএ
[ad_2]
Source link