[ad_1]
মুম্বই: চার দশক পর অলিম্পিকের অধিবেশন বসবে ভারতে। আগামী ১৫ থেকে ১৭ অক্টোবর মুম্বইতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি বা IOC অধিবেশন। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এমন অধিবেশনের আয়োজন করছে দেশ। এর আগে ১৯৮৩ সালে নয়াদিল্লিতে বসেছিল অলিম্পিক কমিটির অধিবেশন।
এই অধিবেশন আসলে IOC-র সদস্যদের সাধারণ সভা। এখানে অলিম্পিক চার্টার গ্রহণ, সংশোধন এবং ব্যাখ্যা করা হয়। একই সঙ্গে যাবতীয় সিদ্ধান্তও গৃহীত হয় এই অধিবেশনে। কোনও সনদ গ্রহণ বা সংশোধন, IOC সদস্য ও পদাধিকারীদের নির্বাচনও হয় এই বৈঠকে। পরবর্তী অলিম্পিক আয়োজন করা হবে কোন শহরে সেই বিষয়েও সিদ্ধান্ত হবে। এই অধিবেশনে IOC নির্বাহী বোর্ডের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়া হতে পারে। যেকোনও সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ভোটাভুটিতে প্রস্তাব গৃহীত হয়ে থাকে।
IOC অধিবেশনে কী কী হতে পারে—
১. পরবর্তী অলিম্পিক গেমসের আয়োজক নির্বাচিত হতে পারে।
২. IOC সভাপতি, সহ-সভাপতি, IOC একজিকিউটিভ বোর্ডের অন্য সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন।
৩. অলিম্পিক চার্টারের সিদ্ধান্ত গৃহীত বা সংশোধিত হতে পারে।
৪. কোনও খেলা নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা বা বাদ দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
৫. ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস ফেডারেশন, ন্যাশনাল অলিম্পিক কমিটি (NOCs) বা অন্য কোনও ক্রীড়া সংস্থার দেওয়া প্রস্তাবের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
৬. আসন্ন IOC সেশন কোন শহরে হতে পারে, সেবিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে।
৭. IOC-র সমস্ত রিপোর্ট এবং অ্যাকাউন্টের অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।
সাধারণত যে কোনও সিদ্ধান্তই ভোটাভুটির মাধ্যমে গৃহীত হয়ে থাকে। কীভাবে হয় এই ভোটাভুটি, দেখে নেওয়া যাক এক নজরে:
১. IOC সভাপতি, বা তাঁর অনুপস্থিতিতে সহ-সভাপতি IOC অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন। সেক্ষেত্রে যিনি সব থেকে বেশি সময় সহ-সভাপতি পদে থেকেছেন তিনিই অগ্রাধিকার পান।
২. ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজন IOC-এর মোট সদস্য সংখ্যার অর্ধেক এবং অতিরিক্ত একজনের ভোট।
৩. প্রত্যেক সদস্যের একটি করে ভোট দেওয়ার অধিকার থাকে। অন্য কারও হয়ে ভোট দেওয়ার অধিকার নেই। ভোট দানে বিরত থাকার সুযোগও নেই।
৪. সাধারণত, যখন কোনও সদস্যের নিজের শহর, দেশের বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়, তখন তাঁকে ভোট দান থেকে বিরত থাকতে হয়।
৫. সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের ভিত্তিতেই যাবতীয় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে থাকে। অলিম্পিক চার্টারের মৌলিক নীতি ও বিধিতে যেকোনও ধরনের পরিবর্তন করতে হলে IOC অধিবেশনে উপস্থিত দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন।
৬. অলিম্পিক আয়োজক নির্বাচনের প্রক্রিয়া এমন কোনও দেশে অনুষ্ঠিত হয়, যে দেশের কোনও প্রার্থী নেই।
৭. ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠের মত থাকলে তবেই কোনও শহরকে আয়োজক হিসেবে নির্বাচন করা যেতে পারে। পায়। কোনও শহরই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে অন্য পথ বেছে নিতে হয়। সেক্ষেত্রে, সবচেয়ে কম ভোট পাওয়া আয়োজক প্রার্থীকে প্রথমেই বাদ দেওয়া হয়। IOC সদস্যরা ভোটের অন্য রাউন্ডে এগিয়ে যান। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া পর্যন্ত পদ্ধতিটির ক্রমাগত পুনরাবৃত্তি করা হয়।
৮. IOC সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং IOC একজিকিউটিভ বোর্ডের সদস্যদের নির্বাচন করা হয় IOC অধিবেশনের মাধ্যমে, গোপন ব্যালটে, প্রদত্ত ভোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে, একই ভাবে সবচেয়ে কম ভোট প্রাপ্ত প্রার্থীকে বাদ দেওয়া হয়। তারপর IOC সদস্যরা ভোটের অন্য রাউন্ডে এগিয়ে যান। ভোটদানে বিরত থাকাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না। নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়া পর্যন্ত ভোটাভুটি চলতেই থাকে।
মুম্বই অধিবেশনের হাল হকিকত: IOC অধিবেশনে বর্তমানে ৯৯ জন ভোটদাতা রয়েছেন। আছেন ৪৩ জন সম্মানিত সদস্য। ক্রীড়া জগতের অভিজাতদের ৬০০-রও বেশি সদস্য মুম্বইয়ের অধিবেশনে যোগ দিতে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রায় একশোটি দেশের সংবাদমাধ্যম উপস্থিত থাকবে। ৫০টিরও বেশি ক্রীড়ার প্রতিনিধিত্ব করা হবে এই অধিবেশনে।
আরও পড়ুনঃ Rohit Sharma: কার থেকে ছয় মারা শিখেছেন রোহিত শর্মা? পাকিস্তান ম্যাচের আগে জানালেন হিটম্যান
মনে করা হচ্ছে এই অধিবেশনটি ভারতীয় খেলাধুলোর জগতে যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে উঠে আসবে। বিশ্ব ক্রীড়া মানচিত্রে ভারতের অবস্থান আরও দৃঢ় ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। স্পোর্ট ইভেন্ট আয়োজন, বিশ্বমানের প্রশিক্ষণ পরিকাঠামো, প্রতিভার বিকাশ এবং লক্ষ লক্ষ ভারতীয় ক্রীড়াবিদের জীবন সমৃদ্ধ করার একাধিক সুযোগ বেরিয়ে আসবে এর পর, এমনই আশা করছেন সকলে। মনে করা হচ্ছে, ভবিষ্যতে ভারতে যুব অলিম্পিক এবং অলিম্পিক গেমস আয়োজনের ক্ষেত্রে এই অধিবেশন গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। একথা আগেই জানিয়েছিলেন IOC-র প্রথম ভারতীয় মহিলা সদস্য নীতা আম্বানি।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: IOC, Mumbai, Nita Ambani, Reliance Foundation
Source link