[ad_1]
ইজরায়েল: গত সপ্তাহের শেষের দিকেই ইজরায়েলের বুকে আঘাত হেনেছে হামাস। ক্রমাগত রকেট হামলার পরে হামাস গোষ্ঠী ইজরায়েলে প্রবেশ করে। সে দেশের সেনাদের হত্যা করে এবং নারী ও শিশুদের পণবন্দি বানায়। এর জবাবে পাল্টা আঘাত হেনেছে ইজরায়েলও। গাজা উপত্যকায় লাগাতার হামলা চালাচ্ছে তারা। ফলে ইজরায়েল আর প্যালেস্তাইনের মধ্যে যুদ্ধের পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল এবং ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।
যদিও ইজরায়েলের সঙ্গে হামাসের এই সংঘাত নতুন নয়। প্রায় তিন দশক ধরে তা চলে আসছে। তবে ২০০৭ সাল থেকে ধারাবাহিক ভাবে এই সংঘাত চলছে। আর হামাসই একমাত্র সংগঠন বা প্রতিপক্ষ নয়, যাদের বিরুদ্ধে ইজরায়েলকে সামরিক সংঘাত চালাতে হয়। প্রতিষ্ঠার পরের দিন থেকেই এই ছোট্ট দেশ বিভিন্ন সময়ে অনেক বিরোধীদের সঙ্গে সামরিক সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে।
ইজরায়েল রাষ্ট্র জন্ম নেওয়ার পর থেকেই একাধিক যুদ্ধ করে। পশ্চিম এশিয়ার স্থানীয় দেশগুলো এর বিরোধিতা করেছিল। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। ১৯৪৮ সালের ১৪ মে ইজরায়েল প্রতিষ্ঠিত হয়। আসলে সেই সময় ব্রিটেনের দখলে থাকা প্যালেস্তাইনের কিছু এলাকা ‘স্টেট অফ ইজরায়েল’-কে দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এর ঠিক পরের দিনই মিশর, সিরিয়া, জর্ডন এবং ইরাক একজোট হয়ে ইজরায়েলের উপর হামলা চালায়।
আরব-ইজরায়েল যুদ্ধের দামামা বেজে যায়। এখানেই শেষ নয়, ইয়েমেন, মরক্কো, সৌদি আরব এবং সুদানও ইজরায়েলের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে যোগ দেয়। যুদ্ধে আরব দেশগুলোর জন্য বরাদ্দকৃত ভূমির অর্ধেক ইজরায়েল দখল করে নেয়। এর পরে ১৯৬৯ সালে সুয়েজ সঙ্কটে ইজরায়েল মিশরের বিরুদ্ধে সিনাই যুদ্ধ করে। এটা দ্বিতীয় আরব-ইজরায়েল যুদ্ধ নামেও পরিচিত। ১৯৬৭ সালে সিরিয়া, জর্ডন, ইরাক এবং মিশরের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয় ইজরায়েল। ছয় দিনব্যাপী ওই যুদ্ধে জয়ীও হয় তারা। আবার ওই একই বছরে ইজরায়েল আরও একটি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে।
যেখানে মিশর, জর্ডন ছাড়াও প্যালেস্তাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নও অংশগ্রহণ করে। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত চলা এই যুদ্ধে উভয়ই জয় দাবি করে। ১৯৭৩ সালে সংঘটিত হয়েছিল চতুর্থ আরব-ইজরায়েল যুদ্ধ। আসলে ইয়োম কিপ্পুর যুদ্ধ, যা অক্টোবর যুদ্ধ এবং চতুর্থ আরব-ইজরায়েল যুদ্ধ নামেও পরিচিত। এটিই ছিল শেষ যুদ্ধ, যেখানে ইজরায়েল নিজের প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষে অবতীর্ণ হয়েছিল। মিশর, সিরিয়া, জর্ডন, আলজেরিয়া, ইরাক, মরক্কো এবং সৌদি আরব একজোট হয়ে এই যুদ্ধে সামিল হয়েছিল। আর মিশর-ইজরায়েল চুক্তির পর এই সংঘর্ষের অবসান ঘটে।
১৯৭৩ সালের পর থেকে ইজরায়েলের সঙ্গে আরব দেশের জোটের যুদ্ধ হয়নি ঠিকই, কিন্তু সময়ে সময়ে ইজরায়েলকে একাধিক সামরিক সংঘর্ষে লিপ্ত হতে হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে প্যালেস্তাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের অপারেশন লিটানির অধীনে এই লড়াই হয়েছিল। যেখানে পরোক্ষ ভাবে জড়িত ছিল লেবাননও। ১৯৮২ সাল থেকে ১৯৮৫ সালের প্রথম লেবানন যুদ্ধে ইজরায়েল লেবাননকে আক্রমণ করে। আর সিরিয়া, পিএলও, জামাউল, আমালের মতো সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ লেবাননে হিজবুল্লাহ, আমাল এবং জামাউলের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা এলাকা অভিযানের অংশ হিসেবে যুদ্ধ করেছিল ইজরায়েল। ১৯৮৭ সালে অসলো চুক্তির পরে প্রথম ইন্তিফাদা নামের এক সংঘর্ষে হামাসের বিরুদ্ধে একটি সংঘাত শুরু হয়। যা ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
আরও পড়ুন, রাতেই শেষ উদ্ধারকাজ, আটকে নেই কেউ! বার বার বিপর্যয়ে প্রশ্নের মুখে রেলমন্ত্রী
আরও পড়ুন, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরবঙ্গের ৫ জেলায়
স্থানীয় প্যালেস্তাইনি সংগঠনও এই সংঘাতে জড়িত ছিল। এরপরে ২০০০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত হামাস এবং প্যালেস্তাইনি জাতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা যুদ্ধ হয়েছিল। এর ফলে ইজরায়েলের প্যালেস্তাইনি অঞ্চলে বিদ্রোহ শুরু হয়ে যায়। অবশেষে ২০০৭ সালের পর থেকে ইজরায়েলে পাঁচ বার সামরিক সংঘর্ষ সংঘটিত হয়েছে।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Israel Palestine war
Source link