সংগীত শিল্পি জেমস :
শিল্পি জেমস একজন জনপ্রিয় রকস্টার। জেমস হলেন উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় রক তারকা। জেমস ফিরেছেন একযুগ পর নতুন গান নিয়ে দর্শকদের জন্য।
জনপ্রিয় রকস্টার বলার প্রশ্নে সবার আগে যার নামটি আসে তিনিই জেমস। শুধু বাংলাদেশে নয়, বর্তমানে এ উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় রক তারকা তিনি। জেমস মানেই ভক্তদের কাছে অন্যরকম উন্মাদনা, অন্যরকম ভালোবাসা, অন্যরকম প্রত্যাশার নাম।
জেমস ফিরেছেন একযুগ পর:
জেমস ফিরেছেন একযুগ পর নতুন গান নিয়ে। তিনি দীর্ঘ এক যুগ ধরে সিনেমার গানের বাইরে আছেন। ভক্তদের দীর্ঘ দিনের অপেক্ষার পালা এবার শেষ হতে যাচ্ছে। জেমস ফিরেছেন দীর্ঘ একযুগ পর নতুন গান নিয়ে। এই গান জেমস তার ভক্তদের ঈদের জন্য উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছেন। গানটি প্রকাশিত হবে কর্পোরেট হাউজ বসুন্ধরা গ্রুপের ইউটিউব চ্যানেল ‘বসুন্ধরা ডিজিটাল’-এ। তাদের এই প্রিয় রক তারকার কণ্ঠে নতুন কোনো গান শুনতে পারেনি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ৩ টায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন জেমস। নতুন এই গান নিয়ে উচ্ছ্বসিত জেমস ভক্তরা। এক ঘণ্টার ব্যবধানে ১০ হাজার রিয়্যাক্ট পড়েছে সেই পোস্টে। প্রায় হাজারো মানুষ কমেন্টে অভিনন্দন জানিয়েছেন জনপ্রিয় এই সংগীতশিল্পীকে। জেমস ফিরেছেন একযুগ পর নতুন গান নিয়ে এই গানের বার্তা তিনি প্রকাশ করেন।
শিল্পি জেমসের জনপ্রিয় গান সমূহ:
দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অনেক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন জেমস। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- তারায় তারায়, লেইস ফিতা লেইস, সুলতানা বিবিয়ানা, হতেও পারে এই দেখা শেষ দেখা, কবিতা তুমি স্বপ্নচারিণী, দুষ্টু ছেলের দল, দিদিমনি, দুঃখিনী দুঃখ করোনা, তোর সব কিছুতে নয় ছয়, বাবা কত দিন দেখি না তোমায়, গুরু ঘর বানাইলা কী দিয়া, লিখতে পারি না কোনো গান, এক নদী যমুনা, মা, বাংলাদেশ, ইত্যাদি। জেমস ফিরেছেন একযুগ পর দর্শকদের নতুন গান উপহার দেওয়ার জন্য।
আরো পড়ুন… রোনালদোর দেশে যাবে ময়মনসিংহের ৩ ফুটবলকন্যা
জেমসের জন্ম-স্থান ও পরিচিতি:
ফারুক মহফুজ আনাম (মঞ্চ নাম জেমস হিসাবেই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়; জন্ম: ২ অক্টোবর ১৯৬৪) তিনি হচ্ছেন একজন বাংলাদেশী গায়ক-গীতিকার, গিটারিস্ট, সুরকার ও অভিনেতা এবং একজন বলিউড নেপথ্য গায়ক। জেমস নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন, এবং বেড়ে উঠেন চট্টগ্রাম শহরে। তিনি রক ব্যান্ড “ফিলিংস” (বর্তমানে নগর বাউল হিসাবে পরিচিত) এর প্রধান গায়ক, গীতিকার ও গিটারিস্ট, যা তিনি ১৯৭৭ সালে প্রতিষ্ঠা করেন।
জেমসের কর্ম জীবন:
চট্টগ্রাম থেকে শুরু হওয়া ব্যান্ড দল ফিলিংস এর মাধ্যমে প্রথমে খ্যাতি অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি এহসান এলাহী ফানটিকে নিয়ে নগর বাউল নামে ব্যান্ড দল গঠন করেন। ১৯৮৭ সালে ফিলিংস ব্যান্ডের সাথে তার প্রথম অ্যালবাম “স্টেশন রোড” মুক্তি পায়। ১৯৮৮ সালে মুক্তি পায় প্রথম একক অ্যালবাম অনন্যা। পরবর্তীতে ফিলিংস ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম দেন “নগর বাউল”। তিনি নগর বাউল এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথম সাইকিডেলিক রক শুরু করেন। তিনি নগরবাউল ব্যান্ডের মূল ভোকাল ও গিটারিষ্ট হলেও তিনি মূলত তার ক্যারিয়ারকেই বেশি গুরত্ব দেন। অনেক গীতিকার তার জন্য সঙ্গীত রচনা করেছেন। যাদের মধ্যে কবি শামসুর রাহমান, প্রিন্স মাহমুদ, শিবলি উল্লেখযোগ্য। কর্মজীবনের প্রথম দিকে তিনি জিম মরিসন, মার্ক নফলার এবং এরিক ক্লাপটনের মত সঙ্গীত শিল্পীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
বলিউডে শিল্পি জেমসের জনপ্রিয়তা:
দেশের গুন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও সুনাম অর্জন করেছেন উপ-মহাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় রক শিল্পী ফারুক মহফুজ আনাম (জেমস)। তিনি বলিউডে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে প্লেব্যাক করেছেন। ৪ টি সিনেমার ৫ টি গানে কন্ঠ দিয়ে নিজে কে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায় আসরে।
জেমস বলিউড সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন ওয়ার্নিং নামক সিনেমায় এবং তাঁর গাওয়া গান টি ছিলো “বেবাসি” যা মুক্তি পায় ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে মাসে।
বিজ্ঞাপন চিত্রের মডেল হিসেবে জেমস:
একটা পেপসি, পয়সা আছে তো, একটা ফাটাফাটি গান শুনবেন, এরপর জেমস ২০১১ সালে এনার্জি “ড্রিংক ব্ল্যাক হর্সের” বিজ্ঞাপনেও কাজ করেন।
শিল্পি জেমসের পুরস্কার:
শিল্পি জেমস একজন শিল্পী ও বিজ্ঞাপন মডেল হিসেবে পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত “দেশা দ্যা লিডার” ছবিতে শফিক তুহিনের কথায় “পতাকাটা খামচাতে কখনো আসে যদি শকুন আর হায়েনার দল” গানের জন্য। সেই সাথে শিল্পি জেমস একই গানের জন্য পেয়েছেন “মেরিল-প্রথম আলো পুরস্কার ২০১৪ সালে।
শিল্পি জেমস মডেল হিসেবে – গুলনকশায় সিজেএফবি পারফম্যান্স অ্যাওয়ার্ডের ১৬তম আসরে ২০১৫ সালে ব্ল্যাক হর্স অ্যানার্জি ড্রিংকসের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে অভিনয় করে পুরস্কার পান।
শিল্পি জেমসের ফ্যান ক্লাব:
বাংলাদেশে প্রথমবারের মত শিল্পীর নামে ফ্যান ক্লাব চালু হয়েছে শিল্পি জেমস ভক্তদের মাধ্যমে। গত বছর ২০১৬ সালের ২৬ জুন শুভ উদ্বোধনের মাধ্যমে জেমস ফ্যান ক্লাবের যাত্রা শুরু হয়। জেমস ফ্যান ক্লাব আর্থসামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এ ছাড়া দেশে ও দেশের বাইরে বাংলা গানের প্রচার- প্রসারে কাজ করবে।