মানবিকতার চর্চা করি, সহনশীলতা, সহিষ্ণুতা, আবেগ-অনুভূতি তথা মানবিকতা উপেক্ষিত এক সমাজ তৈরি হতে চলেছে। অন্য সব গুণ আজ ধুলিতে চাপা পড়ছে। সব শিশুদের আমরা ভালো রেজাল্ট করার পেছনেই কেবল ঠেলে দিচ্ছি। তাকেই ‘ভালো’ বলে স্বীকৃতি দিচ্ছি যার প্রাতিষ্ঠানিক রেজাল্ট এ প্লাস বা তথাকথিত গোল্ডেন এ প্লাস। পরিবারে শিশুরা দিনে দিনে হয়ে উঠছে আত্মকেন্দ্রিক, কিছুটা স্বার্থপরও বটে ।
তারা কারো সাথে মিশে না, মিশতে চাইও না। কোন আত্মীয় স্বজন বা প্রতিবেশির বাসায় যাওয়াতো দূরে থাক, বাসায় কোন গেস্ট আসলে দরজা বন্ধ করে সৌজন্যতাটুকু প্রকাশও করতে আসে না। ক্ষমতার জোরে কিছু মানুষ সম্পর্ক নষ্ট করার মাধ্যমে আনন্দ নেওয়ার চেষ্টা করে।
সময়ের বিবর্তনের সঙ্গে নিজস্ব ধ্যান-ধারণারও পরিবর্তন করতে হবে। সুন্দর ও শুভ কাজের সঙ্গে নিজেকে কিভাবে নিয়োজিত রাখা যায় তার চেষ্টা করতে হবে। প্রকৃত মানুষের মাধ্যমে মানবিক গুণাবলি, মানবতাবোধ এবং মানবাধিকার বিকশিত হয়।
চরম সত্যকে দুই হাতে উঁচু করে, সংসার, সমাজ ও রাষ্ট্রের উত্তাল সাগরে ভেসে এগিয়ে যান তিনি, এগিয়ে নেন সমাজকে। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, এখন বিশ্বাস, আস্থা অর্জনই প্রকৃত মানুষের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি পথ খোঁজেন পথে পথে।
বিপদে-আনন্দে’, ‘অন্যের প্রয়োজনে’ নিজের খেয়েই তিনি পরের ঘরে আলো জ্বেলে পথ হাতড়ান। ‘দুঃখ-সুখের উত্তাল সমুদ্র’ হাতড়ে তিনি তাকে দাঁড় করাতে সক্ষম হন সংগ্রামের পাহাড় চূড়ায়-ঠাঁই করে নেন ইতিহাসে। আগামী দিনের নতুন সূর্যের সোনালি আলোয় উদ্ভাসিত হয় তার মন।
এ কথা যদি আমরা এখনাে না বুঝি তবে বড় দেরি হয়ে যাবে। ধন ধান্য পুষ্প ভরা এ সােনার বাংলা শ্মশান হয়ে যাবে অচিরেই। মানব জীবন মানবিকতা,অসাম্প্রদায়িকতা,শ্রদ্ধা,ভালােবাসা, প্রকৃতির প্রতি ভালােবাসা ফিরিয়ে আনা অতীব জরুরি। মানবিকতার চর্চা করি। চর্চা করি মনুষ্যত্বের। ধর্ম, বর্ণ, নারী, পুরুষ নয় – আমরা মানুষের জয় গান গাই। আমরা আমরা জীবনের জয় গান গাই।
ইমরান হোসাইন
শিক্ষার্থী : গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।