ক্রিকেট নিয়ে বাজি না ধরি শুরু হয়েছে ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক দেশীয় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট লীগ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল)। আর টি-টোয়েন্টির এসব জমজমাট লীগকে ঘিরে প্রতিনিয়তই হাজার হাজার টাকার ফলাফল বাজি, ওভার বাজি, রান বাজিসহ চলছে বিভিন্ন ধরনের জুয়া।
জুয়াবাজির ফাঁদে পড়ে নিঃস্ব হচ্ছেন অনেকেই। ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলা চলছে সারা দেশে। গ্রাম বা শহরের চায়ের দোকান থেকে ক্লাব, পাঁচতারা হােটেলেও বসছে জুয়ার আসর। নিঃস্ব হচ্ছে সাধারণ মানুষ। খেলার মাঠে, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ম্যাচে খেলার মাঠেই জুয়াড়িদের সক্রিয় হতে দেখা যায়।
অনেক মাঠ থেকে জুয়াড়িদের আটক করার ঘটনাও ঘটেছে। চায়ের দোকানের সামনে ভিড় করা তরুণ, ছাত্র কিংবা মাঝ বয়সী ব্যবসায়ীসহ যারা আছেন, সবাই টেলিভিশনে ক্রিকেট খেলা দেখেন আর বাজি ধরেন। তাদের বাজি টাকার অংকে খুব বড় নয়। কিন্তু নেশাটা ভয়ঙ্কর।
তাদের অনেকেই ইতিমধ্যে সর্বস্ব খুইয়েছেন। কিন্তু এটা নিয়ে তাদের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই। বরং নানা কায়দায় অর্থ সংগ্রহ করে প্রতিদিন ক্রিকেট বাজির নামে জুয়া খেলায় মেতে উঠেন। বয়সী তরুণ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পর্যন্ত এই জুয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছেন।
কোনাে কোনাে অফিসেও নাকি সহকর্মীরা নিজেদের মধ্যে বাজি ধরছেন। যেকোনাে খেলা নির্মল আনন্দ দেয়ার জন্য। জুয়ার টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে হামলা, সংঘর্ষ এমনকি খুনের ঘটনাও ঘটছে। জুয়া আইনত নিষিদ্ধ। তবে ক্যাসিনো, হাউজিসহ অন্য জুয়ার ব্যাপারে পুলিশ-র্যাবের নজরদারি থাকলেও রাজধানীতে আইপিএল, বিপিএলে জুয়া নিয়ে নেই কোনো আভিযান।
অবশ্য দেশের কয়েকটি এলাকায় আইপিএল এবং বিপিএল জুয়া ভয়াবহ আকার ধারণ করায় অভিযানে নেমেছে পুলিশ ও র্যাব। কয়েকটি জেলায় বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। মাঠের পারফরম্যান্স একজন খেলােয়াড়ের জনপ্রিয়তা বাড়ায়।
কিন্তু প্রতিটি বল কিংবা ব্যাটসম্যানের প্রতিটি শট যদি বাজি ধরার বিষয় হয়ে যায়, তাহলে খেলার আনন্দ আর থাকে না। এ ধরনের জুয়া সামাজিক শান্তি বিনষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। সমাজে বড় ধরনের কোনাে সর্বনাশ হওয়ার আগেই লাগাম টেনে ধরতে হবে। বন্ধ করতে হবে এই অনৈতিক কর্মকাণ্ড। ক্রিকেট বাংলাদেশকে অন্য ধরনের এক গৌরবের অধিকারী করেছে।
আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য বেশি। দেশের ক্রিকেটাররা এখন বিদেশেও পেশাদার ক্রিকেট খেলছেন। বিদেশের আঙ্গিকে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের পেশাদার ক্রিকেট হচ্ছে। এ অবস্থায় ক্রিকেটের জগত কলঙ্কিত করা অবশ্যই অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। তাই আসুন ক্রিকেট নিয়ে বাজি না’ ধরি। খেলাটাকে বিনোদন হিসেবে গ্রহণ করি।
ইমরান হোসাইন
শিক্ষার্থী : গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।