নারীর অধিকার ফিরিয়ে দেওয়াই হোক নারী দিবসের উদ্দেশ্য
নারী দিবসের লক্ষ্য হোক নারীর অধিকার এবং উপযুক্ত সম্মানের জন্য আন্তর্জাতিক নারী দিবস। প্রতি বছর ৮ মার্চ তারিখে পালিত হয় এই বিশেষ দিনটি। ইতিহাসের পাতা থেকে ভবিষ্যতের পৃথিবীতে মহিলাদের জয়যাত্রাকে তুলে ধরে এই দিন। জাতি, ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি সমস্ত দর্শনের উর্ধ্বে গিয়ে কুর্নিশ জানানো হয় মহিলাদের কৃতিত্বকে।
। এই দিনটিকে উপলক্ষ্য করেই আরও জোরদার হয়ে ওঠে মহিলাদের অধিকারের লড়াই। মানুষ হিসেবে একজন নারী সামাজিক কর্মকান্ডের বিভিন্ন ধারায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সর্বত্র নারী সমাজ তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থা ও পিতৃতান্ত্রিক মানসিকতা এর জন্য দায়ী। ফলাফলে নারীর উপর পাশবিক সহিংসতা বেড়েছে চরমভাবে।
একবিংশ শতাব্দীতে পদার্পণ করেও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। দেশের বিদ্যমান আইনেও নারী ও পুরুষের মধ্যে বৈষম্য চরম মাত্রায় বিরাজমান। সেজন্য নারীসমাজের পক্ষ থেকে সিডও সনদের পূর্ণ স্বীকৃতি ও বাস্তবায়নের দাবি উত্থাপন করা হলেও তা উপেক্ষিত হয়েছে বার বার। জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালা প্রণীত হলেও সেখানে সম্পত্তিতে নারী-পুরুষের সমঅধিকার নীতি হিসেবে ঘোষিত হয়নি। অথচ সংবিধানের ২৮ (১) অনুচ্ছেদে বলা আছে – কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ-নারী-পুরুষ ভেদ বা জন্মস্থানের কারণে কোন নাগরিকের প্রতি রাষ্ট্র বৈষম্য প্রদর্শন করবে না।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস এর পূর্বনাম আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস। সভ্যতার অভাবনীয় সাফল্যের পেছনে নারী ও পুরুষের সমান অবদান অনস্বীকার্য। নারীকে বাদ দিয়ে পুরুষের একক অংশগ্রহণের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নের কথা কল্পনা করা যায় না। কিন্তু যুগ যুগ ধরে নারীরা অবহেলিত ও শােষিত হয়ে আসছে। পুরুষশাসিত সমাজব্যবস্থায় সামাজিক কুসংস্কার, ধর্মীয় গোঁড়ামি, নিপীড়ন ও বৈষম্যের বেড়াজালে নারীরা তাদের অধিকার বিসর্জন দিয়ে আসছে। তাই নারী মুক্তির আহ্বান নিয়ে প্রতি বছর ৮ মার্চ বিশ্বব্যাপী নারী দিবস পালন করা হয়। জগৎ সংসারে নারীকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হয়।
নিজের সন্তানকে গর্ভে ধারণ এবং জন্ম দিয়ে পৃথিবীর আলাে দেখানাের মাধ্যমে একজন মা’ নারী হিসেবে জীবনের সার্থকতা লাভ করে। যখন একটি শিশুর জন্ম হয় তখন একজন মায়েরও জন্ম হয়। এছাড়া স্ত্রী, বােন, কন্যাসহ মর্যাদাপূর্ণ সব সম্পর্কের বাঁধনে নারীরা সমাজের সাথে আবদ্ধ।
তারা সমাজের অর্ধেক অংশ। তাদের প্রতিভা ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা বিকাশের সুযােগ নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের জন্য অবশ্য পালনীয় দায়িত্ব ও কর্তব্য। আন্তর্জাতিক নারী দিবস যেন শুধু একটি দিনের জন্য না হয় বরং প্রতিটি দিন হােক নারীর জন্য, নারীর অধিকার আর উপযুক্ত সম্মানের জন্য।
আন্তর্জাতিক নারী দিবসের মূল লক্ষ্যই হলাে নারীর ন্যায্য অর্থাৎ সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সমাজের অগ্রগতি সাধন । তাই নারী ও পুরুষ সমান মর্যাদা ও অধিকার পেলেই আন্তর্জাতিক নারী দিবস যথাযথ মর্যাদা পাবে, অর্জিত হবে নারী দিবসের লক্ষ্য।
আরো পড়ুনঃ ৫৫ বয়সে বেলায়েত ঢাবিতে ভর্তি হতে চান।
আমাদের ফেসবুক পেজঃ সময় বুলেটিন