বসন্ত ঋতু তে প্রকৃতির রূপ
ঋতুরাজ বসন্ত,এ ঋতুতে প্রকৃতি কন্যা নতুন রুপে সজ্জিত হয়।বিশেষ গাছে নতুন কচি পাতার আগমন ঘটে। ‘শিমুল,পলাশ আর কৃষ্ণ চুড়ার আবাসে চারিদিক লাল রাঙা হয়ে পড়ে।বসন্ত ঋতু তে রমনীরা হলুদ-লালচে শাড়ীর সংমিশ্রনে নিজেদেরকে নতুনত্বর ছোঁয়া দান করে। বাসন্তি শাড়িতে অপরূপে সজ্জিত পকৃতির সাথে রমনীরা ও নতুন রুপে নিজেকে সাজিয়ে তোলে। এছাড়াও বসন্ত ঋতু তে ছেলেরা সাদা পাঞ্জাবী আর শিশুরা রং-বে’রঙের চারপাশে সুমধুর সুর, মিষ্টি কলতান। প্রকৃতি মেলেছে রঙিন পাখনা। পত্র-পল্লব, তরুলতা ও বৃক্ষরাজিতে সবুজ হাসি। ফুল-পাখি-পতঙ্গের মিলনমেলায় ভাসছে বঙ্গীয় প্রান্তর।
বসন্ত ঋতু তে সর্বত্র উৎসবের রং। বসন্তের ছোঁয়ায় মাতলাে প্রাণ। শীতের শুষ্কতা মুছে দখিনের হাওয়ায় ভর করে এসেছে বসন্ত। প্রকৃতি তাই উদ্বেলিত নবযৌবনের নবরূপ পাওয়ার আশায়। অপেক্ষার প্রহর কাটিয়ে বসন্তকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত শিমুল, পলাশ, কনকচাপা, রক্তকাঞ্চন, বেলি, কৃষ্ণচূড়ার দল। ঋতুপতিকে কাছে পেয়ে পাতাঝরা গাছটি সদাব্যস্ত নিজেকে নতুন করে সাজাতে।
কচি পাতার সবুজ আঁচলে আবৃত হতে শূন্য গাছটি জীর্ণ পাতাগুলােকে তাড়া দিচ্ছে নিচ থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য। বাংলার পথ-প্রান্তর শােভিত আজ লাল লিলিমায়। ফাগুনের রঙে রঙিন হতে এসেছে বসন্তের কোকিল কৃষ্ণচূড়ার ডালে। কুহু কুহু সুরের মূর্ঘনায় ভাসাচ্ছে প্রকৃতি। ফাগুনের রােদেলা দুপুরে বসন্তদূতের মন উজাড় করা সুরে তাল মিলিয়ে ঘুঘুও শােনাচ্ছে ভিন্ন সুর। টিয়া, শালিক, ফিঙে, পাপিয়া, বৌ-কথা কও, বুলবুল আর চড়ুইও বসে নেই।
ঋতুর এই পরিবর্তনে শীতের কুয়াশা আর অন্ধকার থেকে বসন্তের আলোর ভুবন। শীতের জড়তা কাটে। যে মেলানিনের উৎসার বেড়েছিল, তা তখন থিতু হয়ে আসে। ঘুমচক্র আর মেজাজ বদলে মন–মেজাজ ভালো হওয়ার দিন আসে। কত দিনের আলো তাই মনের মধ্যে আনন্দ আসে, সবকিছু ভালো লাগার দিন আসে। কিন্তু এ সময় কি শর্করা খাবার আগ্রহ বাড়ে আর ওজন বাড়ে শরীরে। আর এ সময় থাকে ভালোবাসা দিবস।
তাই হরমোনের দোলা শরীরে। প্রেম হরমোন অক্সিটোসিন। ভালোবাসার ছোঁয়া পেলে এই হরমোন উৎসারিত হয়। মগজের এক গভীর অন্দর হাইপ থ্যালামাস থেকে নিঃসরণ ঘটে এর। রবীন্দ্রনাথ তাঁর একটি গানে লিখেছিলেন: ‘বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।’ দরজার ওধারে জেগে বসে আছে উদ্গ্রীব বসন্ত। কী রোমাঞ্চকর এই বসন্তের চিত্র। কী উদগ্র আর জান্তব। কী রক্তপিপাসু আর সুন্দর। আসুন আমরাও পূর্ণিমা–জোছনায় এই উজ্জ্বল ক্ষুধিত জাগুয়ারের পায়ের শব্দের জন্য কান পেতে থাকি, চৈত্রের ভালোবাসায় উৎকর্ণ হই।
আরো পড়ুনঃ জমি বিক্রয়ে করনীয়