[ad_1]
পর্বতসম লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে বাংলাদেশ। ড্রেসিংরুমে ফেরার যেন মিছিল শুরু হয়েছে।
পরিস্থিতি এমনই যে, সাকিববাহিনীর সামনে উঁকি দিচ্ছে রেকর্ড ব্যবধানে হারের শঙ্কা।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ২৮.৩ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২২ রান সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ দল।
২০০০ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে ২৩৩ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে রানের হিসাবে সেটাই এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পরাজয়। ওই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৩২১ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল পাকিস্তান। জবাবে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল ৮৭ রানে।
আজকের ম্যাচে জিততে হলে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রয়োজন ২৬১ রান। ফলে লজ্জার রেকর্ড এখনও উঁকি দিচ্ছে।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই জোর ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম পাঁচ ওভার কোনোমতে পার করলেও পরের দুই ওভারেই তিন উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা।
ষষ্ঠ ওভারে প্রোটিয়া পেসার মার্ক ইয়ানসেনের প্রথম বলেই উইকেটকিপার হাইনরিখ ক্লাসেন হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (১২)। তার বিদায়ের পর ক্রিজে এসে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে সেই ক্লাসেনের কাছেই ক্যাচ তুলে দেন নাজমুল হোসেনে শান্ত।
পরের ওভারে লিজাড উইলিয়ামসের লাফিয়ে উঠা বল টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসানের (১) ব্যাটের কানায় লেগে জমা হয় ক্লাসেনের গ্লাভসেই। ফেরার মিছিল আর থামেনি। এরপর একে একে বিদায় নেন মুশফিকুর রহিম (৮), লিটন দাস (২২), মেহেদী হাসান মিরাজ (১১)।
এরপর নাসুম আহমেদকে নিয়ে বিপর্যয় ঠেকানোর চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। কিন্তু ৩ চারে ১৯ রান করে রিয়াদকে রেখে ড্রেসিংরুমে ফেরেন নাসুম। তবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
এর আগে মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৮২ রান করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জিততে হলে রেকর্ডই গড়তে হবে টাইগারদের। বিশ্বকাপ ইতিহাসে ৩৮৩ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই।
ফিল্ডিংয়ে নেমে বাংলাদেশকে প্রথম উইকেটের জন্য অবশ্য লম্বা অপেক্ষা করতে হয়নি। শরিফুল ইসলাম সপ্তম ওভারের প্রথম বলে বোল্ড করেন ১৯ বলে ১২ রান করা রেজা হেনড্রিকসকে। পরের উইকেটের জন্যও অপেক্ষা করতে হয়নি বেশিক্ষণ। ইনিংসের শুরু থেকে বল করা মেহেদী হাসান মিরাজ এবার ৭ বলে ১ রান করা রাসি ফন ডার ডুসেনকে এলবিডব্লিউ করেন।
মিরাজকে সাকিব চালিয়ে নেন পরেও। তাকে দিয়ে করানো টানা ছয় ওভারে কিছুটা অস্বস্তিতেও ছিলেন কুইন্টন ডি কক। কিন্তু সেটি যে একদমই সাময়িক, পরে যত সময় গেছে ভালোমতোই বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। ১৩৭ বলে ১৩১ রানের জুটি গড়েন এইডেন মারক্রামের সঙ্গে। ৭ চারে ৬৯ বলে ৬০ রান করা মারক্রামকে ফেরান সাকিব।
কিন্তু ডি কক সেঞ্চুরি ছুঁয়েছেন, এরপর আরো ধরা দিয়েছেন বিধ্বংসী রূপেই। এর মধ্যে সাবেক অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথকে ছাড়িয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়ে গেছেন তিনি। ৬০১ রান করেছেন তিনি ১০ ইনিংসে, ১২ ইনিংসে স্মিথের রান ছিল ৫৭২।
এবারের বিশ্বকাপে ১০১ বলে নিজের তৃতীয় শতক ছোঁয়া এই ব্যাটার পরের পঞ্চাশ রান করেছেন স্রেফ ২৮ বলে। সাকিবের করা ৪৩তম ওভারে ২২ ও শরিফুলের পরের ওভারে নেন ১৭ রান।
ইনিংস শেষের আগেই অবশ্য তাকে ফেরানো গেছে। হাসান মাহমুদের ফুল লেংথের বল খেলতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে দাঁড়ানো নাসুম আহমেদকে ক্যাচ দেন তিনি। ভাঙে ক্লাসেনের সঙ্গে ১৪২ রানের জুটি ৭ ছক্কা ও ১৫ চারে ১৪০ বলে ১৭৪ রান করা এই ব্যাটার ড্র্রেসিংরুমে ফেরেন দর্শকদের কাছ থেকে অভিবাদন পেতে পেতে। দারুণ এক ইনিংস খেলে ভেঙেছেন রেকর্ড। উইকেটরক্ষক ব্যাটার হিসেবে এটাই বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। এর আগে ২০০৭ বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৯ রান করেছিলেন অজি কিংবদন্তি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট।
ডি কককে ফিরিয়েও অবশ্য কাজ হয়নি তেমন। এরপর তাণ্ডব চালান হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার মিলে। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির কাছে থাকা ক্লাসেন শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৪৯ বলে ২ চার ও ৮ ছক্কায় করেন ৯০ রান। এছাড়া মিলার অপরাজিত থাকেন ১৫ বলে ৩৪ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে। বাংলাদেশের হয়ে হাসান দুটি উইকেট শিকার করেছেন। সাকিব, মিরাজ ও শরিফুল ঝুলিতে পুরেন একটি করে উইকেট।
বাংলাদেশ সময়: ২১১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০২৩
এমএইচএম
[ad_2]
Source link