মুখে দুর্গন্ধ সমস্যা থাকলে ধারে কাছে কেউ ঘেঁষতে চায় না। আপনার ব্যক্তিত্ব বা সৌন্দর্য যতই থাকুক, মুখে গন্ধ হলে কেউ আপনার সংস্পর্শে আসতে চাইবে না । বিভিন্ন রকমের বদ অভ্যাসের কারণে মুখে গন্ধ হয়।মুখে দুর্গন্ধ হলে করণীয় নিয়েই আমাদের প্রতিবেদন।
মুখে দুর্গন্ধ হলে করণীয়ঃ-
দিনে অন্তত দু’বার দাঁত ব্রাশ:
খাবারের কণা দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকাটা কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয়।
এটি প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হয়। আটকে থাকা খাবারে জন্মানো জীবাণু মুখে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করে।মুখে দুর্গন্ধ হলে করণীয় হলো প্রতিবার খাবার খাওয়ার পর বা দিনে অন্তত দু’বার দাঁত মাজা এবং ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার করা প্রয়োজন।
জিভ পরিষ্কার করুন:
দাঁত মাজলেই মুখের সব জীবাণু চলে যায় না। প্রতিবার দাঁত মাজার সময় জিহব্বা পরিষ্কার করুন। এতে জিভের ওপর জমা খাবারের কণা দূর হবে। এতে করে মুখে দুর্গন্ধ হলে করণীয় বিষয়গুলো ভালো করে জানা হয়ে যাবে।
- দৈনিক কম করে হলেও ৩ থেকে ৪ লিটার গ্লাস পানি খেতে হবে।
- ফলমূল, শাকসবজি, দইজাতীয় খাবার বেশি করে খাওয়া উচিত।
- লেবু, জাম্বুরা, কমলা, কামরাংগা, মাল্টা ও আনারসের শরবত পান করা।
- গাজর, শসা, টমেটো, আমড়া ও আমলকি ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রাখা।
- মুখ ও দাঁতের সঠিক পরিচর্যা করা।
ধুমপান ছাড়ুন:
মুখে দুর্গন্ধ হলে করণীয় বা মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার এক মূল কারন হলো এই ধূমপান। এর কারণে মুখের ভেতর শুকিয়ে যায় এবং মুখের মধ্যে জন্মানো জীবাণুর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। ধূমপানের ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে। তাই মুখের ক্ষত বা ঘা শুকাতে সময় নেয়। সেক্ষেত্রে মুখে মারাত্মক দুর্গন্ধ হয়। হজমের সমস্যা দূর করুন: হজমের সমস্যার কারণেও মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে। পেট পরিষ্কার না হলে এই সমস্যা বাড়ে। সেক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে হজমের এনজাইম খেতে পারেন। তাতে হজম ক্ষমতা বাড়বে। পেট পরিষ্কার হবে।ক্ষত সারান: মুখের ঘা বা ক্ষতর কারণে দুর্গন্ধ হয়। সমস্যা যত দিন থাকবে, মুখের দুর্গন্ধও বাড়তে থাকবে।
মুখে দুর্গন্ধ কিসের লক্ষণঃ-
খাবারের পর ৩০-৬০ মিনিট আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, ব্রাশ করার জন্য যেন প্রাকৃতিক উপায়ে থুথুর মাধ্যমে খাদ্য পরিষ্কার হয়ে যেতে পারে ও মুখের নরমাল PH বহাল থাকে।
খাবারের পরপরই মুখের PH এসিডিক থাকে, খাবার পর থুথু প্রথম মুখের PH নরমাল করে।
তাই খাবারের পরপরই দাঁত ব্রাশ করার ফলে এনামেলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অপরদিকে এসিডিক PH -এ ব্যাকটেরিয়ার প্রজনন হার বেশি।
- অ্যান্টি মাইক্রোবিয়াল মাউথ ওয়াশ যেমন- ০.২ শতাংশ ক্লোরহেক্সিডিন অথবা ০.৫ শতাংশ পভিডোন আয়োডিন প্রতিদিন ৩ বার, ২ চামচ ৩০ সেকেন্ড ধরে প্রতিবার কুলকুচি করতে হবে। গোলাপ জল দিয়ে গার্গল করা যেতে পারে।
- প্রতি রাতে ১ বার ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করতে হবে।
- মেনথল গাম ঘুমাতে যাওয়ার পূর্বে খাওয়া যেতে পারে।
- নাক দিয়ে শ্বাস নেওয়ার অভ্যাস করা।
মুখে দুর্গন্ধের জন্য কোন ৭টি শারীরিক সমস্যা দায়ী
- ডায়বেটিসের সমস্যা । মুখে দুর্গন্ধের মূল কারণ হচ্ছে ডায়বেটিসের কারণে দেহে ইনসুলিনের অভাব।
- সাইনাসে সমস্যা। এর কারনে নাকে ও গলায় মিউকাস জমে থাকে। তাই মুখে দুর্গন্ধ হয়।
- প্রোটিনের মাত্রা অতিরিক্ত বেশি হওয়ার কারনেও গন্ধ হয়ে থাকে।
- টনসিলের সমস্যা। এর কারনে সালফার উৎপন্নকারী ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিচ্ছে যার জন্য নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হচ্ছে।
- মুখশুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা। মুখে ভেতরের স্যালিভা শুকিয়ে গেলে ব্যাকটেরিয়া জন্মনেয় ফলে দুর্গন্ধ হয়।
- কিডনি সমস্যা।কিডনি সঠিকভাবে কাজ না করলে নাইট্রোজেন উৎপন্ন হয় যার জন্য দুর্গন্ধ হয়।
- মাড়িতে ইনফেকশন এর জন্যও মুখে দুর্গন্ধ হয়।
মুখে দুর্গন্ধ কিসের লক্ষণ এ সর্ম্পকে আরও বিস্তারিত আলোচনার জন্য অবশ্যই একজন ডাক্তারের সরনাপন্য অত্যাবর্শীয়। এসকল কারণে প্রচুর পরিমাণে মুখে গন্ধ হয়ে থাকে। এ সকল মুখে দুর্গন্ধ হলে করণীয় নিয়ে অনেক বিশেষজ্ঞরা অনেক আলোচনাও করে থাকেন।তার বর্নণা নিচে দেওয়া হলো।বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকরা বলছেন মেনে চলতে হবে ওরাল হাইজিন।
মৌসুমি তাজা ফল ও সবজি চিবিয়ে খেতে হবে। ক্যাফেইন প্রয়োজন হলে কফির বদলে চা খাওয়ার পরামর্শ। চিনিহীন চুইং গাম চেবানো যেতে পারে। দই যেমন হজমে সাহায্য করে, ঠিক তেমনই মুখের দুর্গন্ধ দূর করতেও সক্ষম। ভিটামিন সি-র পর্যাপ্ত জোগান প্রয়োজন। তাই বিভিন্ন ধরনের লেবু খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা। সিগারেট বা জর্দা দেওয়া পান খাওয়ার অভ্যাসও ছাড়তে হবে।
আরও পড়ুনঃ- স্বাস্থ্য বিষয়ক আর্টিকেল
আরও পড়ুনঃ মাঙ্কিপক্স কি এবং মাঙ্কিপক্স কিভাবে ছড়াচ্ছে
নতুন নতুন খবর জানতে আমাদের ফেসবুক পেইজে যুক্ত থাকুন: সময় বুলেটিন