ভেদরগঞ্জে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে মা Somoybulletin

[ad_1]

শরীয়তপুর: সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার পদ্মা-মেঘনা নদীতে চলছে অবাধে মা ইলিশ ধরার মহোৎসব। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে অস্থায়ী ৫০টি ভাসমান আড়ত বসিয়ে চলছে মা ইলিশ কেনা-বেচা।

সরেজমিনে কাঁচিকাটা, দুলারচর, এলাকায় পৌঁছাতেই দেখা যায় অসংখ্য নৌকার বহর। সবাই মাঝ মেঘনার পথে। স্থানীয় কিছু অসাধু জনপ্রতিনিধি ওই সব জেলেকে (দাদন দিয়ে) টাকার বিনিময়ে মাছ শিকারে বাধ্য করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় পাড়া-মহল্লায় এসব ইলিশ অবাধে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ছোট আকারের ইলিশ ২০০ থেকে ৩০০ আর বড় সাইজের মা ইলিশ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়াও প্রশাসনের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। মা ইলিশ কেনা-বেচার অসাধু কিছু কর্মকর্তা জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলেরা জানায়, পেটের তাগিদে প্রশাসনের জেল ও জরিমানা উপেক্ষা করে মাছ ধরতে আসেন তারা। প্রশাসনের লোকজন কখন নদীতে আসছেন, তারা ফোনের মাধ্যমে আগেই জেনে যান।  

তারা আরও জানায়, ছদ্মবেশে তাদের সহযোগীরা দিনরাত উপজেলা মৎস্য অফিসের গেট ও থানার গেটে বসে থাকেন। কেউই রওনা হওয়া মাত্র নদীর ঘাটে থাকা তাদের আরেক সদস্যকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পরই আমাদের পুরো নেটওয়ার্কে খবর ছড়িয়ে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন আড়তদার বলেন, এখন পর্যন্ত আমার পাঁচটি ট্রলার নিয়ে গেছে। ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা দাদন দিয়েছি। জেলেদের সেই টাকা এবার ওঠাতে পারব না। এবার নদীতে তেমন মাছ নেই। তাছাড়া প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলতে হয় আমাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দোলারচর ভাংগা স্কুলের মানিক দেওয়ান, শফি দেওয়ান, সিরাজ মন্দি, হাবিব হাওলাদারের নেতৃত্বে ১০টি আড়ত, উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের মোল্লা বাজার এলাকায় ইউপি সদস্য সুমন ও মকবুল মেম্বারের নেতৃত্বে ১৫টি আড়ত, উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ব্যাপারী বাজার এলাকায় মোশাররফ সরদার, লালমিয়া ব্যাপারী, হাসান হাওলাদারের নেতৃত্বে ৫টি আড়ত, দেওয়ান বাজার এলাকায় মানিক দেওয়ান, আক্তার হোসেন, লাল মিয়া ব্যাপারী, হাসান হাওলাদার, মোশাররফ সরকার নেতৃত্বে ৬টি আড়ত, মনাই হাওলাদার বাজার এলাকায় চারভাগা ইউনিয়ন ৬ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য হাবিব হাওলাদারের নেতৃত্বে ১০টি আড়ত, গৌরাঙ্গ বাজার এলাকায় ফরিদ ও উজ্জ্বল বকাউলের নেতৃত্বে ৩টি আড়ত, কুবুদ্ধির ঘাট এলাকায় ইউপি সদস্য বাবুলের নেতৃত্বে ৫টি আড়ত, বুন্দুকছি বাজার এলাকায় বাচ্চু মাঝির নেতৃত্বে ৪টি আড়ত, দক্ষিণ তারাবুনিয়া ইউনিয়নের বাসগাড়ি বাজার এলাকায় কাশেমের নেতৃত্বে ৫টি আড়ত, নূরউদ্দিন বাজার এলাকায় কবির ঢালী, ইকবাল পাটোয়ারীর নেতৃত্বে ৫ আড়ত, সিডুর টেক এলাকায় ইকবাল খানের নেতৃত্বে ১০ আড়তসহ উপজেলা বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে ভাসমান আড়ত তৈরি করে মা ইলিশ কেনা-বেচা করা হয়।

মাছ কিনতে আসা কয়েকজন পাইকার বলেন, এ সময়ে অল্প দামে ইলিশ পাওয়া যায়। আমরা এইসব আড়ত থেকে সারা দিন মাছ কিনে ভোরে মোটরসাইকেল, অটোরিকশায় করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে বিক্রি করি। তবে গতবারের তুলনায় এবার মাছ কম তাই কেনা-বেচা তেমন ভালো না। তাছাড়া সবাইকে ম্যানেজ করে আমাদের কাজ করতে হয়।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। আমরা প্রজনন মৌসুম শুরু হওয়ার আগ থেকেই জেলেদের সরকারি নিয়ম মানতে উদ্বুদ্ধ করেছি। আমরা যখনই সংবাদ পাচ্ছি, তখনই অভিযান চালানো হয়। ভাসমান আড়তের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ার পর থেকে নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৩
আরএ



[ad_2]
Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *