মেয়ের বিয়ে-ঘোরাফেরায় জবির গাড়ি ব্যবহার করেন Somoybulletin

[ad_1]

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি): উপাচার্য মেয়াদের আড়াই বছরে অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক নিজের বাড়ি পাবনায় গেছেন দুবার। প্রতিবারই তিনি নিজের টাকায় তেল কিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি নিয়ে গেছেন।

অথচ উল্টো চিত্র দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার কামালউদ্দিন আহমদের ক্ষেত্রে।

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে প্রায়ই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি নিয়ে কুমিল্লার দাউদকান্দির বাড়িতে ঘুরতে যান। ট্রেজারারের জন্য জিপ বরাদ্দ রয়েছে। সেটিসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য গাড়ি ব্যবহার করে নানা স্থানে বেড়াতে যান তিনি। দেন না জ্বালানির খরচ। এমনকি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে মেয়ের বিয়েতেও কয়েকটি এসি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন তিনি।

ব্যক্তিগত কাজে গাড়ি ব্যবহার করলেও পরিবহন কমিটির আহ্বায়কের প্রভাব খাটিয়ে কোনো বিল দেন না তিনি। ট্রেজারার কামালউদ্দিনের এমন গাড়ি বিলাস প্রতি মাসে বিল হয় লাখ টাকার বেশি। এসব ব্যক্তিগত হলেও প্রদানের নাম নেন না। এভাবে চার বছর ধরে গাড়ি বিলাস করে গেছেন তিনি। এ নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছে সমালোচনার ঝড়।

ট্রেজারার কামালউদ্দিনের গাড়ি ব্যবহারের কয়েক মাসের তথ্য প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে। এতে দেখা যায়, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে মাসের ১৬ দিনই ট্রেজারার কামালউদ্দিন আহমদ নিজের জিপ গাড়ির বাইরে তিনটি এসি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এসি মাইক্রোবাস (গাড়ি নং- ঢাকা মেট্রো-চ-৫৪-১৮০৮) সকাল ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত রামপুরা-এয়ারপোর্ট ও ধানমন্ডিতে নিজের বাসা পর্যন্ত ব্যবহার করেছেন। একই গাড়ি ১২ ডিসেম্বর ফের এয়ারপোর্ট, ১৮ ডিসেম্বর মগবাজার, ১৯ ডিসেম্বর খিলক্ষেত, ২০ ও ২১ ডিসেম্বর নিজের বাসা ধানমন্ডি, ২২ ডিসেম্বর বাড্ডা নতুন বাজার নিয়ে গেছেন। এ ছাড়া একই মাসের ২০ ডিসেম্বরে ট্রেজারার বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকটি এসি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রা-চণ্ড৫৪-১৭৭১) বাড্ডা, ২৩ ডিসেম্বর কুমিল্লার দাউদকান্দিসহ ঢাকার মালিবাগ, ধানমন্ডি বাসা এলাকায় ব্যবহার করেছেন। পর দিন এই এসি মাইক্রোবাস ধানমন্ডি নিজের বাসাসহ এয়ারপোর্টে ব্যবহার করেছেন ট্রেজারার। অন্যদিকে আরেকটি এসি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো-চণ্ড৫৪-১৬৫২) ট্রেজারার ১২ ডিসেম্বর নিজের বাসা ধানমন্ডি ও এয়ারপোর্টে ব্যবহার করেছেন। এ গাড়িগুলো ট্রেজারার তার নিজের জন্য বরাদ্দ জিপ গাড়ির বাইরে ব্যবহার করেছেন। অথচ উপাচার্য নিজের জিপ গাড়ি অফিস কাজের বাইরে ব্যবহার করলে নিজে তেল খরচ দিয়ে দেন।

পরিবহন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৩ জানুয়ারি ট্রেজারার কামালউদ্দিন আহমদ দুপুর ২টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি এসি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। একই মাসে মেয়ের বিয়েতে ২৯ জানুয়ারি ও ৩০ জানুয়ারি দুপুর ২টা থেকে রাত ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি মাইক্রোবাস ব্যবহার করেন। ট্রেজারারের তিন দিনের পরিবহন বিল দেওয়ার সুপারিশ করেন সাবেক পরিবহন প্রশাসক। তবে এসবের তোয়াক্কা করেননি তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন কমিটি আহ্বায়ক ট্রেজারার কামালউদ্দিন আহমদ। তার বিলের বিষয়ে ফের আলাপ করার জন্য নোট দেন পরিবহন প্রশাসককে। পরে ট্রেজারারের বিল স্থগিত রেখে বাকিদের বিল কাটার জন্য সুপারিশ করেন। এর কিছুদিন পরেই সেই পরিবহন প্রশাসক পরিবর্তন হয়ে যায়।

এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড্রাইভার সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ছুটি নিয়ে ৩৮ দিন হজে থাকাকালীন ট্রেজারার কামালউদ্দিন আহমদের জিপ গাড়ি তার পারিবারিক কাজে ব্যবহার হয়েছে। নিজে ছুটিতে থেকেও গাড়ি পারিবারিক কাজে ব্যবহার হওয়া আইনবিরোধী বলে মন্তব্য করেন একাধিক শিক্ষক। এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ট্রেজারার অধ্যাপক ড. শওকত জাহাঙ্গীর বলেন, ঘটনা যদি এমন ঘটে তবে তা নীতি বিরুদ্ধ। অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়কে অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

এ বিষয়ে পরিবহন প্রশাসক ড. সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ঘটনাটি বেশ আগের। সাবেক পরিবহন প্রশাসকের সময়ের। আর শুধু ভিসি এবং ট্রেজারার তাদের নিজেদের জন্য গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন কিন্তু পারিবারিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাড়ি ব্যবহারের সুযোগ নেই।

সাবেক পরিবহন প্রশাসক আবদুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, ঘটনাটা মনে আছে। সেই সময়ে এই বিষয়টি বাকি রেখেই ফাইল ছাড়া হয়। তবে পরিবহন অফিস পাওনা টাকা পাবে কারণ এটা পরিশোধ না হলে সে যেই হোক সে ধরা পড়বে। সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ কারণে তার মন্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০২৩
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



[ad_2]
Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *