মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় র্যাগিং দূর করতে সিনিয়রদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিঃ ইশতিয়াক আহমেদ
র্যাগিং সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল বিভাগের ২য় বর্ষের শ্রেণি প্রতিনিধিদের সাথে এক আলোচনা সভা আয়োজন করেছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্র।
রবিবার (২৯ মে) দুপুর ২ঃ৩০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইএসআরএম বিভাগের গ্যালারি রুমে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাভাবিপ্রবি শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, সিপিএস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ উমর ফারুক এবং বিজিই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফাতেমা তুজ জোহরা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাভাবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগ নেতা নিবিড় পাল ও মানিক শীল এবং মাভাবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির সদস্যবৃন্দ।
আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজক শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম সাইফুল্লাহ ২য় বর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশ্যে বলেন, ‘র্যাগিং নামক অসুস্থ সংস্কৃতি থেকে তোমরা বের হয়ে আসবে বলে আশা করছি। প্রত্যেক বিভাগের একজন করে নিয়ে একটি সমন্বয়ক কমিটি গঠন করা হবে যারা হবে জুনিয়রদের বন্ধুসুলভ সিনিয়র এবং তারা এ র্যাগিং বিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
আরো পড়ুন… SEO কি? কেন SEO করা হয়? কিভাবে SEO করতে হয়?
বিভাগের সিনিয়ররা যদি তোমাদের ওপর জুনিয়রদেরকে ম্যানার শেখানো নিয়ে চাপ সৃষ্টি করে তাহলে তোমরা শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রে অভিযোগ দেবে। আমরা শাস্তি নির্ধারণ করে এর যথাযথ ব্যবস্থা নেবো। এরপর ও কেউ যদি নিয়ম বহির্ভূত কোনো কাজ করে এবং তার সত্যতা পাওয়া যায় তাহলে তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে তার ছাত্রত্বও বাতিল করা হতে পারে।’
এ সময় শিক্ষকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা র্যাগিং বিষয়টির কারণ ও প্রতিকারের নানামুখী বক্তব্য তুলে ধরেন।
এর আগে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে এক জুনিয়র শিক্ষার্থীকে র্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে
লিখিতভাবে এ অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তারেক। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে র্যাগিংয়েরে প্রতিকার চেয়ে সংবাদকর্মীদের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
মঙ্গলবার (২৯ মার্চ) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের কার্যালয়ে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান মো. রোকনুজ্জামানের সুপারিশক্রমে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
লিখিত আবেদনে বলা হয়, গত ২৮ মার্চ রাতে ক্যাম্পাসের নিকটস্থ সন্তোষ আরিফ নগরে অবস্থিত ছাত্রাবাসে দ্বিতীয় বর্ষের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী শামীম, আজমাইন, সেলিম, মাহিন ও রাহাত এবং ফার্মেসী বিভাগের সাফি ও আরও অনেকের দ্বারা র্যাগিংয়ের শিকার হন তারেক। আবেদনে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও লেখাপড়া চালানো কঠিন হওয়ায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়,ঐ দিন গভীর রাতে তারেককে টাঙ্গাইলের সন্তোষ আরিফ নগরে অবস্থিত ছাত্রাবাসের সামনে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর স্থানীয় জনগণ, পুলিশ প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর মঙ্গলবার সকালে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর অমানবিক র্যাগিং এবং শারীরিক, মানসিক অত্যাচার করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিষেধ থাকলেও রাতে তারা বিভিন্ন মেসে ডেকে নিয়ে সারারাত চলে র্যাগিং। উল্টা পাল্টা হলে ভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। আমরা খুবই অসহায়, বলার কেউ নাই। কাকে বলবো জানি না। বললেও শাস্তি পেতে হয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মীর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, “অমাদের কাছে অভিযোগ এসেছে । অভিযোগের আলোকে আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করবো। অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ফরহাদ হোসেন বলেন, “কিছুদিন্ আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীণবরন অনুষ্ঠান হয়েছে। আমি প্রতিটি বিভাগে গিয়ে র্যাগিং যাতে না হয় সে সম্পর্কে সতর্ক করা হয়েছে। এ বিষয়ে কমিটি গঠিত হবে। যদি কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
যুক্ত থাকুন সময় বুলেটিনের ফেইসবুক পেইজে…..somoybulletin